সর্বশেষ

মেসির হাতে বিশ্বকাপ, ৩৬ বছর পর চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা

এটাই কি বিশ্বকাপের ইতিহাসের সেরা ফাইনাল? হয়তো। এটাই কি বিশ্বকাপ ইতিহাসের সেরা ম্যাচ? হয়তো। এ যেন নিয়তিরই লিখন ছিল। লিওনেল মেসির হাতে বিশ্বকাপ যাবে, সেটা যেনতেনভাবে না। নাটকের পর নাটক, স্নায়ুর চূড়ান্ত পরীক্ষা শেষে সম্ভবত বিশ্বকাপের ইতিহাসে সবচেয়ে অবিশ্বাস্য চিত্রনাট্যের সমাপ্তিটা হবে মেসির হাতে ট্রফি ওঠার মধ্য দিয়ে।




যে ট্রফি দিয়ে ফুরিয়েছে আর্জেন্টিনার ৩৬ বছরের বিশ্বজয়ের অপেক্ষা। কে জানে হয়তো এর মধ্যে দিয়ে শেষ হবে সর্বকালের সেরা ফুটবলার নিয়ে বিতর্কটাও। যে অধরা ট্রফিটা ছিল না বলে মেসিকে সেরা মানতে রাজি ছিলেন না অনেকে, আজ রাজ থেকে সেই ট্রফিটা যে শুধুই মেসির।

মেসির জোড়া গোল, এমবাপ্পের হ্যাটট্রিক, দি মারিয়ার গোল মিলিয়ে নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময় শেষে ৩-৩ সমতা। তারপর টাইব্রেকারে ৪-২ ব্যবধানে জিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা। টাইব্রেকারে আর্জেন্টিনার চার নম্বর শটটা নেওয়া গঞ্জালো মন্তিয়েলের শটটা যখন ফ্রান্সের জালে গেল, লুসাইল স্টেডিয়ামে সঙ্গে সঙ্গে একটা গগনবিদারী গর্জন।




মন্তিয়েল জার্সিতে মুখ ঢেকে কাঁদতে শুরু করলেন। মাঠে থাকা আর্জেন্টাইন খেলোয়াড়েরাও সঙ্গে সঙ্গে উচ্ছ্বাসের পরপরই আবেগাপ্লুত হয়ে গেলেন। চোখ থেকে জল পড়তে লাগল প্রায় সবার। কাঁদলেন মেসিও। এমন একটা দিনের অপেক্ষাতেই তো ছিলেন তিনি সেই ২০০৬ বিশ্বকাপ থেকে।

কিন্তু বিশ্বকাপ তাঁকে বারবার হতাশ করে ফিরিয়েছে। আট বছর আগে মারাকানায় খুব কাছে গিয়েও ফাইনালে হারতে হয়েছিল জার্মানির অতিরিক্ত সময়ের এক গোলে। কিন্তু কাল রাতে আর মেসি খালি হাতে ফিরে যেতে রাজি ছিলেন না। আর মেসি যদি রাজি না থাকেন, তাঁকে ফেরানোর সাধ্য কার! এমবাপ্পেও পারলেন না। হ্যাটট্রিক করলেন, প্রায় ছিটকে যাওয়া ম্যাচ থেকে অবিশ্বাস্যভাবে ফ্রান্সকে নিয়ে ঘুরে দাঁড়ালেন।




কিন্তু শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে ফ্রান্সের টানা দ্বিতীয় বিশ্বকাপ জয়ের পথে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে গেলেন এমিলিয়ানো ‘দিবু’ মার্তিনেজ। টাইব্রেকারে ফ্রান্সের প্রথম শট ঠেকিয়ে গেলেন, পরের শটটাও মিস করল ফ্রান্স। কে জানে, বিশ্বকাপ ট্রফিতে তখনই আর্জেন্টিনার নাম লেখা হয়ে গেলে আসলে।

অথচ প্রথম এক ঘন্টা শেষে কে ভেবেছিল এই ম্যাচটা অতিরিক্ত সময়ে যাবে! কে ভেবেছিল টাইব্রেকারে যেতে হবে এই ফাইনালের ফল পেতে। তখন পর্যন্ত ম্যাচে তো ফ্রান্স বলতে গেলে নেই-ই বলা যায়। শুধু ২ গোল খেয়ে পিছিয়েই নয়, মনে হচ্ছে ওরা খেলছেই না। ফাইনাল একটা দলের মধ্যেই হচ্ছে। এটাই কি বিশ্বকাপের সবচেয়ে একতরফা ম্যাচ হতে যাচ্ছে কি না, সেই আলোচনাও ততক্ষণে শুরু হয়ে গেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *