সর্বশেষ

৩ বিঘায় চাষ করে ইসমাঈলের ২৫ লাখ টাকার ড্রাগন বিক্রি!

গত ৩ বছর আগে ড্রাগন চাষ শুরু করে ইতোমধ্যে ২৫ লাখ টাকার ড্রাগন ফল বিক্রি করেছেন। বর্তমানে তিনি ১৫ বিঘা জমিতে ড্রাগন ফলের চাষ করছেন। ড্রাগন ফল চাষে তার সফলতা দেখে অনেকেই ড্রাগন ফল চাষে আগ্রহী হয়েছেন। ড্রাগন ফল চাষে সফল রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার মোঃ ইসমাঈল হোসেন।




মো: ইসমাঈল হোসেন রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার বিদিরপুর এলাকার বাসিন্দা। তিনি ৩ বছর আগে পিরিজপুরের মহিশালবাড়ী থেকে চারা সংগ্রহ করে ৩ বিঘা জমিতে ড্রাগন ফলের চাষ শুরু করেন। ধীরে ধীরে বাগানের পরিধি বাড়তে থাকে। তাকে ড্রাগন ফল চাষে সফল হতে দেখে অনেকেই ড্রাগন ফল চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। বর্তমানে তিনি ১৫ বিঘা জমিতে ড্রাগন ফলের চাষ করছেন।

রাজশাহীতে ৫৬ দশমিক ৭১ হেক্টর জমিতে ড্রাগন চাষ হচ্ছে। জেলায় বাণিজ্যিক বাগানের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। সব উপজেলার মধ্যে পবা, গোদাগাড়ী, মোহনপুর, বাগমারা উপজেলার চাষিরা ড্রাগন চাষে ঝুঁকছে বেশি।




এদিকে, ৪ জন শ্রমিকে সাথে নিয়ে ইসমাঈল হোসেন তার নতুন ১২ বিঘার ড্রাগন বাগানে আগাছা পরিষ্কার করছেন। গাছগুলো সারিসারি সিমেন্টের খুঁটিতে লোহার তার আটকানো। ঢালু বরেন্দ্র বেলে-দোঁয়াশ মাটি হওয়াতে দ্রুত বেড়ে উঠছে ড্রাগন চারা।

ইমাঈল হোসেন বলেন, আমার বাবা তেলের ব্যবসা করতেন। তারপর আমিও ওই ব্যবসার সাথে যোগ দেই। গত ৩ বছর আগে ৩ বিঘা জমি প্রস্তুত করে ড্রাগন ফলের চাষ শুরু করি। এই ৩ বিঘা জমির চারপাশে মেহগনি গাছ। মাঝখানটা ফাঁকা ছিল। সেই ফাঁকা জায়গাতেই ড্রাগনের চারা রোপন করে চাষ শুরু করি। আমি রাসায়নিক সার খুব কম ব্যবহার করি।




কারণ তাতে ফলের মান ভালো থাকে। জৈবিক সার হিসেবে পোলট্রির লিটার (মল) গাছের গোড়ায় দিই। চারা লাগানোর ১৮ মাস পর ফল তোলা যায়। আস্তে আস্তে ফলন বাড়ে। সামান্য রাসায়নিক সার ওষুধ যা লাগে তাতে গাছ ভালো থাকে। মেজর কোনো রোগ বালাই ড্রাগনের নেই।

ইসমাঈল আরও বলেন, বিঘা প্রতি ২০ হাজার হিসেবে ১২ বিঘা জমি লিজ নিয়ে ড্রাগনের বাগান করেছি। বর্তমানে আমার মোট ১৫ বিঘা জমিতে ড্রাগনের বাগান রয়েছে। ৩ বিঘা জমির লাভ দিয়েই ১২ বিঘা জমিতে বাগান করেছি। গত ২ বছরে প্রায় ২৫ লাখ টাকার ড্রাগন ফল বিক্রি করেছি।




১৮ মাসে ফলন দেয়। এক বছরে সব টাকা তুলে আগামী বছর যা উৎপাদন হবে সেটি হবে পুরোটাই লাভ। আমার এই ৩ বিঘার বাগান থেকে ২৫ লাখ টাকার ফল বিক্রি করেছি। কেউ যদি চারা নিতে চায় তাকে ফ্রি দেব। জাত ভালো ছিল। রেড জাতের কারণে বাজারে চাহিদাও আছে।

জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মোছা. উম্মে ছালমা বলেন, রাজশাহীতে ৫৬ দশমিক ৭১ হেক্টর জমিতে ড্রাগন চাষ হচ্ছে যা থেকে ৬৮৮ দশমিক ৩০ মেট্রিক ড্রাগন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ড্রাগনসহ অনেক ফলের চাষ বাড়ছে। দেশের উৎপাদিত ফলেই আমাদের চাহিদা মিটবে। আশা করছি একটা সময় আসবে যখন আমাদের বিদেশ থেকে ফল আমদানি করতে হবে না।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মোজদার হোসেন বলেন, সরকার সবজি, ফল সহ সব ধরনের চাষাবাদের প্রতি নজর দিয়েছেন। আমদানি নির্ভরতা কমাতে দেশি চাষিদের বীজ, সার সহ প্রণোদনা দিয়ে সহযোগীতা করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *