সর্বশেষ

আইসিসির নতুন নিয়মে ফায়দা নিচ্ছে মুস্তাফিজ, অথচ সাকিব-তাসকিনের মাথায় হাত

ওয়ানডে ক্রিকেটে বল ব্যবস্থাপনার নতুন নিয়ম যেন মোস্তাফিজুর রহমানের মতো বোলারদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। শেষ পাঁচ ওভারে মোস্তাফিজের দুর্দান্ত বোলিং দেখে নতুন করে আলোচনায় এসেছে এই ‘কাটার মাস্টার’। বিশেষ করে নতুন নিয়ম অনুযায়ী ৩৪ ওভারের পর ফিল্ডিং দল একটি বল বেছে নিয়ে সেটি দিয়ে ৫০ ওভার পর্যন্ত খেলা চালিয়ে যেতে পারে—এ সুযোগ মোস্তাফিজের মতো স্কিলফুল পেসারদের জন্য বড় সুবিধা তৈরি করেছে।

নতুন নিয়মে পুরোনো বল, মোস্তাফিজের কাটার আরও ভয়ঙ্কর

পুরোনো বল মানেই মোস্তাফিজের বাড়তি সুবিধা। কারণ, যত পুরোনো হবে বল, তত বেশি গ্রিপ পাবেন মোস্তাফিজ। তাঁর স্লোয়ার ও কাটার তখন আরও কার্যকর হয়। এই নতুন নিয়মের ফলে একটি নির্দিষ্ট বল ১৬ ওভার পর্যন্ত পুরোনো হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে, যা শেষ দশ ওভারে মারাত্মক হতে পারে প্রতিপক্ষ ব্যাটারদের জন্য।

গতকালের ম্যাচে মোস্তাফিজের শেষ স্পেল ছিল এক কথায় দুর্দান্ত। ২০তম ওভারের পর থেকে শুধুমাত্র একটি বল দিয়েই খেলা চলেছে। ফলে বলটি যখন ৪৫-৪৬ ওভারে যায়, তখন এটি তৃতীয় ধাপে পুরোনো হয়, যেখানে মোস্তাফিজ তার সেরা কাটারগুলো আদায় করতে সক্ষম হন। প্রেমাদাসার মতো উইকেটে এটি হয়ে ওঠে বিপজ্জনক অস্ত্র।

টি-টোয়েন্টিতে মোস্তাফিজ কেন ভয়ঙ্কর? একই জিনিস এখন ওয়ানডেতেও!

টি-টোয়েন্টিতে ১৬ থেকে ২০ ওভারে মোস্তাফিজ ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেন। কারণ বল তখন কিছুটা পুরোনো হয় এবং ব্যাটাররা মারমুখী। এখন ওয়ানডেতে সেই ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে। একটি বল দীর্ঘসময় ব্যবহারে কাটার ও রিভার্স সুইং—দুটিই ফিরে আসছে ওয়ানডেতে।

রিভার্স সুইং শিখতে হবে তরুণ পেসারদের

নতুন নিয়মে রিভার্স সুইং হতে পারে বড় অস্ত্র, কিন্তু এখানেই বাংলাদেশ পিছিয়ে। তাসকিন আহমেদ, তানজিম সাকিবরা এখনো রিভার্স সুইং আয়ত্তে আনতে পারেননি। কারণ, তারা যখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এসেছেন, তখন দুই পাশ থেকে দুটি নতুন বল ব্যবহৃত হতো। ফলে বল পুরোনো হবার সুযোগ কম ছিল।

আইপিএলের সাম্প্রতিক আসরে মিচেল স্টার্কসহ অনেক পেসার রিভার্স সুইংয়ে সাফল্য পেয়েছেন। বাংলাদেশকেও সেই দিকটিতে নজর দিতে হবে। তানজিম কিছু ইয়র্কার ও রিভার্সের ইঙ্গিত দিয়েছেন, তবে এটি এখনো ‘প্রমিনেন্ট’ নয়। কোচদের উচিত এখন থেকেই তরুণ পেসারদের এই স্কিলে উন্নত করতে কাজ শুরু করা।

স্পিনাররাও পাবেন বাড়তি সুবিধা

বল যত পুরোনো হবে, স্পিনারদের জন্যও তা হবে বাড়তি সুবিধা। রিভার্স নয়, উইকেটের সহায়তায় তারা বেশি টার্ন আদায় করতে পারবেন। এমনকি বলা যেতে পারে, এই নতুন নিয়ম মূলত স্পিনারদের অনুকূলেই তৈরি। আর মোস্তাফিজ তো এমন পেসার যিনি একটু জোরে বল করা ‘স্পিনার’ ধরনের। তাকে কেউ কেউ বলেন, “মুরালিধরনের কাটার ভার্সন।”

মোস্তাফিজ হতে পারেন ওয়ানডে দলের অপরিহার্য অংশ

পরিবর্তিত নিয়ম অনুযায়ী, মোস্তাফিজুর রহমানের স্কিল সেট এখন ওয়ানডে ক্রিকেটে আরও বেশি কার্যকর। বাংলাদেশ যদি এই নিয়মের আলোকে পেস বোলিং ইউনিটকে নতুনভাবে গড়ে তোলে এবং রিভার্স সুইংয়ের মতো স্কিলে জোর দেয়, তাহলে মোস্তাফিজের নেতৃত্বে একটি ভয়ঙ্কর বোলিং আক্রমণ গড়ে তোলা অসম্ভব নয়।

এই মুহূর্তে মোস্তাফিজ কেবল একজন বোলার নন, তিনি হতে যাচ্ছেন ওয়ানডে দলের ছায়াতলের সেই ত্রাতা, যিনি শেষ পাঁচ ওভারে ম্যাচ ঘুরিয়ে দিতে পারেন একাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *