ছাত্র আন্দোলনের ৩৬ দিনের টানাপোড়েনের পর গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন। এর পরপরই জাতীয় সংসদ ভেঙে দেওয়া হয়। এই পালাবদলের প্রভাব দেশের ক্রিকেটেও পড়েছে, এবং ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনও এখনো লাপাত্তা।
বর্তমান পরিস্থিতিতে মিরপুরে ক্রিকেট বোর্ডের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ হচ্ছে। এর মধ্যে, অক্টোবরে অনুষ্ঠিতব্য নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ বাংলাদেশের আয়োজক হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। সংবাদ এসেছে যে, বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি বাংলাদেশের পরিবর্তে বিকল্প ভেন্যুতে বিশ্বকাপ আয়োজনের কথা ভাবছে।
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সচিব জয় শাহ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আইসিসি ইতিমধ্যেই বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে, তবে বিসিসিআই সেই প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে। জয় শাহ বলেন, ‘আমি অক্টোবরের নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজনে আগ্রহী নই।’
ভারত বিশ্বকাপ আয়োজনের প্রস্তাব না মানার পেছনে দুটো যুক্তি দেখান জয় শাহ: ‘বিসিসিআইয়ের কাছে প্রস্তাব দিয়েছিল যদি ভারত বিশ্বকাপ আয়োজন করতে পারে। তবে আমি সরাসরি না করে দিয়েছি। আমরা তখনো বর্ষা মৌসুমে থাকতে পারি। আর পরের বছর নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপের আয়োজক। আমি মনে করি, আমরা পরপর দুটি বিশ্বকাপ আয়োজনের আগ্রহী নই।’
আইসিসির এমন প্রস্তাবের পর বাংলাদেশের বিশ্বকাপ আয়োজন নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। জয় শাহের বক্তব্যের পর আইসিসি বাংলাদেশ থেকে বিশ্বকাপের আয়োজক কেড়ে নিতে পারে। তারা বাংলাদেশের পরিবর্তে শ্রীলঙ্কা, ভারত এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতকে বিকল্প হিসেবে বিবেচনা করছে।
ভারত তাদের প্রস্তাব প্রত্যাহার করার পর শ্রীলঙ্কা এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত বিশ্বকাপ আয়োজনের প্রতিযোগিতায় যোগ দিয়েছে। তবে শ্রীলঙ্কায়ও বর্ষাকাল চলছে, এবং গত বছর এশিয়া কাপের সহ-আয়োজক হিসেবে তারা বৃষ্টির কারণে সমস্যায় পড়েছিল।
বিসিবি কর্মকর্তারা দেশের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে সন্তুষ্ট নয় এবং নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চেয়ে বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন। এছাড়া নতুন ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদও বিশ্বকাপ আয়োজন নিয়ে জাতিসংঘের সহায়তা নেওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন।
আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের কিছু দেশের ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, তাই আমরা জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা করবো। নিরাপত্তা এবং অবকাঠামো নিয়ে কিছু সমস্যা আছে। আমরা প্রফেসর ইউনূসের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করবো, যিনি ক্রীড়াপ্রেমী মানুষ এবং আশা করি তিনি বিষয়টি সমাধান করতে সক্ষম হবেন।’