বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার সময় জানিয়ে দিয়েছেন সাকিব আল হাসান। আগামী মাসে মিরপুরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়েই টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় বলতে চান বাঁহাতি অলরাউন্ডার। তবে সেক্ষেত্রে শর্তও বেঁধে দিয়েছেন সাকিব।
শর্তটা তাঁর নিরাপত্তা নিয়ে। দেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর হত্যা মামলায় সাকিবকে আসামি করা হয়েছে। এরপর থেকে বাংলাদেশের দুটি সিরিজ ছিল দেশের বাইরে, সেগুলোতে খেললেও সাকিব দেশে ফেরেননি। সে কারণে প্রশ্ন উঠেছিল, সাকিব দেশে ফিরে খেলতে পারবেন তো?
সাকিবও আজ বিদায়ের ঘোষণা দেওয়া সংবাদ সম্মেলনে দেশে ফিরে খেলার নিরাপত্তা এবং প্রয়োজনে দেশ ছাড়ার সুযোগের শর্ত দিয়েছেন। এরপর মিরপুরে আজ সাকিবের নিরাপত্তা নিয়ে কথা বলেছেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ।
কানপুরে ভারতের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট শুরু হবে আগামীকাল, তার আগে আজ সংবাদ সম্মেলনে সাকিব জানিয়েছেন, মিরপুরে শেষ টেস্ট খেলার ইচ্ছের কথা বিসিবিকে জানিয়েছেন। সেটা সম্ভব না হলে কানপুরে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটিই তাঁর শেষ টেস্ট হয়ে থাকবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন।
মিরপুরে খেলতে গেলে কী কী ব্যাপারে তিনি নিশ্চয়তা চান, সংবাদ সম্মেলনে সেটিও জানিয়েছেন সাকিব, ‘আমি যেন (দেশে) গিয়ে খেলতে পারি এবং নিরাপদ অনুভব করি। যখন দেশের বাইরে আসার দরকার হবে, দেশের বাইরে আসতেও যেন আমার কোনো সমস্যা না হয়।’
বিসিবির সঙ্গে এভাবেই কথা হয়েছে জানিয়ে সাকিব বলেছেন, ‘বিষয়গুলোর সঙ্গে যারা জড়িত তারা দেখছেন। তারা হয়তো আমাকে একটা সিদ্ধান্ত দেবে, যেটার ভিত্তিতে আমি দেশে গিয়ে খুব ভালোভাবে খেলে অন্তত টেস্ট ফরম্যাটটা ছাড়তে পারব। এভাবেই (বিসিবি সভাপতি) ফারুক ভাইয়ের সঙ্গে ও নির্বাচকদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। যদি সুযোগ থাকে, আমি যদি দেশে যাই, খেলতে পারি, তাহলে মিরপুর টেস্ট হবে আমার জন্য শেষ। সেই কথাটা বোর্ডের সবার সঙ্গে বলা হয়েছে। তাঁরা চেষ্টা করছেন কীভাবে সুন্দরভাবে আয়োজন করা যায়।’
তা বিসিবি সাকিবের নিরাপত্তার চাহিদা পূরণে কতটা কী করতে পারবে, বোর্ডের পরিকল্পনাটাই-বা কী? এ নিয়ে আজ সন্ধ্যায় মিরপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেছেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ। তবে বলটা যৌক্তিকভাবে সরকারের কোর্টেই ঠেলে দিয়েছেন তিনি, ‘আমি কোনো এজেন্সি না, পুলিশ বা র্যাবও না। সরকারের তরফ থেকে নিরাপত্তার বিষয়টা আসতে হবে। এই মুহূর্তে বোর্ড থেকে এ সম্পর্কে কিছু বলা সম্ভব না।’
নিরাপত্তা বোর্ড এককভাবে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে না – এটা তো সহজেই বোঝা যায়। বিসিবি সভাপতিও সেটিই বলেছেন, ‘বোর্ড ব্যক্তিগতভাবে কাউকে নিরাপত্তা দিতে পারবে না আসলে। সাকিব যদি এখান থেকে শেষ টেস্ট খেলতে পারে, ওর মতো আমিও বিশ্বাস করি এর থেকে ভালো কিছু হতে পারে না।’
অবসরের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সাকিব বিসিবি সভাপতি, নির্বাচক থেকে শুরু করে সবার সঙ্গেই কথা বলেছেন। সে আলোচনায় সাকিবকে সিদ্ধান্ত বদলাতে চেষ্টা কেন করেননি, সে ব্যাখ্যাও দিয়েছেন ফারুক আহমেদ, ‘সাকিব এ মুহূর্তে তার জীবনের খুব বাজে সময় পার করছে। তাকে বোঝানোর চেষ্টা করিনি। সে মনে করেছে অবসর নেওয়ার এটাই সঠিক সময়। আমি তার সিদ্ধান্তকে সম্মান জানাই। আমার দিক থেকে ওর জন্য খুব বেশি কিছু বলার নেই।’