সর্বশেষ

এবার বাবা-মেয়ে একসঙ্গে দিচ্ছেন এসএসসি পরীক্ষা

চায়ের দোকানদার আব্দুল হান্নান। বয়স ৪০ ছঁইছুঁই। ২৫ বছর আগে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলেন। কিন্তু পাস করতে পারেননি। তারপরও হাল ছেড়ে দেননি আব্দুল হান্নান। এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন তিনি। একই পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে তার মেয়ে হালিমা খাতুনও।আব্দুল হান্নানের বাড়ি নাটোরের লালপুর উপজেলার নারায়ণপুর গ্রামে।

 

মেয়ে হালিমা খাতুন নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলস হাই স্কুলের মানবিক শাখা থেকে লালপুর শ্রীসুন্দরী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এবং আব্দুল হান্নান রুইগাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের ভোকেশনাল শাখা থেকে লালপুর থানা বালিকা কেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছেন। সরেজমিন দেখা যায়, পৃথক দুই কেন্দ্রে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পরীক্ষা দিচ্ছেন বাবা-মেয়ে। পরীক্ষা শেষে কথা হয় আব্দুল হান্নানের সঙ্গে। তিনি জানান, ১৯৯৮ সালে নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলস হাই স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে অকৃতকার্য হন।

এরপর আর পড়াশোনা চালিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়নি। গোপালপুর রেলগেটে শুরু করেন চায়ের দোকানদারি। সেই দোকানের আয় ও জমিজমা চাষ করে স্ত্রী, দুই ছেলে আর এক মেয়েকে নিয়ে সংসার জীবনে বেশ ভালো আছেন।

তাহলে এ বয়সে আবারও পড়াশোনা কেন, এমন প্রশ্নের জবাবে আব্দুল হান্নান বলেন, ছাত্রজীবনের এসএসসি পাসের প্রবল ইচ্ছা দিনে দিনে তার মধ্যে প্রবল থেকে প্রবলতর হতে থাকে। এজন্য ২০২১ সালে তিনি উপজেলার রুইগাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম (ভোকেশনাল) শ্রেণিতে ভর্তি হন।

এই বয়সেও বাবা এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ায় খুশি মেয়ে হালিমা খাতুন। সে বলে, ‘আমার বাবাকে দেখে অন্যরা পড়াশোনায় অনুপ্রাণিত হবেন। বাবার সঙ্গে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে আমি গর্ববোধ করি।’ লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীমা সুলতানা বলেন, শিক্ষার কোনো বয়স নেই। তার উদাহরণ বয়োজ্যেষ্ঠ পরীক্ষার্থী আব্দুল হান্নান। কেবল ইচ্ছাশক্তি, মনোবল আর একটু প্রচেষ্টায় তিনি লেখাপড়া শুরু করেছেন। এতে অন্যরা শিক্ষাগ্রহণে অনুপ্রাণিত হবেন।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *