গত দেড় দশকে বাংলাদেশের ফুটবলের দুটি ধারা দুটি ভিন্ন পথ অনুসরণ করেছে। পুরুষ ফুটবল দল প্রায়ই হতাশ করেছে ফুটবলপ্রেমীদের, যেখানে নারীরা বারবার নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করেছে। আন্তর্জাতিক মঞ্চে নারীদের জন্য বিভিন্ন ডাক এসেছে, এবং বয়সভিত্তিক প্রতিযোগিতায় সফলতা অর্জন করেছে। তবে, বিশ্বকাপ ফুটবলের সর্বোচ্চ স্তর এবং আঞ্চলিক শ্রেষ্ঠত্বের প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব দেখা যায়নি।
তবে এবার সেই আক্ষেপ মেটানোর কিছুটা সুযোগ এসেছে, এবং এটি পুরুষদের ফুটবলে নয়, বরং নারীদের ফুটবলে। বাংলাদেশের নারী ফুটবল দলের বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্ন পূরণের নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের (এএফসি) নতুন নিয়মের কারণে।
এখন পর্যন্ত, এশিয়ান অঞ্চল থেকে মহিলাদের বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ এএফসি মহিলা এশিয়া কাপ বা এশিয়ান গেমসের ওপর নির্ভর করত। কিন্তু নতুন নিয়ম অনুসারে, ফিফা বিশ্বকাপের বাছাই একটি সম্পূর্ণ ভিন্ন টুর্নামেন্টের ভিত্তিতে হবে।
নতুন ফরম্যাটে, ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে তলানিতে থাকা দলগুলো প্রথম রাউন্ডে নিজেদের মধ্যে খেলবে। এই রাউন্ডকে ‘রাউন্ড-১’ বলা হবে। একক রাউন্ড রবিন লিগে শীর্ষ দলগুলো দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠবে। বাংলাদেশের নারী ফুটবল দলের বিশ্বকাপ যাত্রা এখান থেকেই শুরু হবে, যা তাদের জন্য একটি বড় জয় হবে, কারণ এর আগে তারা কখনোই বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে অংশগ্রহণের সুযোগ পায়নি।
রাউন্ড-২ এ ২৪টি দল থাকবে, যেখানে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে থাকা দলগুলো সরাসরি অংশগ্রহণ করবে। রাউন্ড-১ পেরোনো দলগুলো তাদের সাথে যোগ দেবে। এই পর্বে ২৪টি দল ৬টি গ্রুপে ভাগ করা হবে এবং ১২টি দল একক রাউন্ড রবিন লিগ থেকে উত্তীর্ণ হয়ে রাউন্ড-৩-এ যাবে।
রাউন্ড-৩-এ, দলগুলো তাদের বিশ্বকাপ স্লটের ভিত্তিতে মুখোমুখি হবে এবং প্রথমবারের মতো হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে ভিত্তিতে খেলা হবে। এখান থেকে দলগুলো সরাসরি বিশ্বকাপ অথবা প্লে অফে খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে। বাংলাদেশের নারী ফুটবল দলের জন্য এই সুযোগ নতুন এবং দীর্ঘমেয়াদি হলেও এটি তাদের প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের মঞ্চে সুযোগ এনে দিতে পারে।
এএফসি অনুসারে, এই কোয়ালিফায়ার ২০২৭ থেকে শুরু হবে। নারী দলের খেলার সংখ্যা এবং অংশগ্রহণের সুযোগ বৃদ্ধি করতে এএফসি এই নতুন পন্থা গ্রহণ করেছে। একই সঙ্গে, এএফসি মহিলা এশিয়া কাপ এবং মহিলা অলিম্পিক বাছাই পর্বও আপডেট করা হচ্ছে।