সরকার পরিবর্তনের পর থেকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় পরিবর্তনের হাওয়া বইতে থাকে। এই হাওয়ার প্রভাব বিসিবিতেও দেখা গেছে, যেখানে নানা গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এসেছে। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের পদত্যাগের পর নতুন সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন ফারুক আহমেদ।
পাপনের বিরুদ্ধে দেশের অনেক মানুষের অসন্তোষ ছিল, আর তার বিদায়ের পর অনেকের মনে কিছুটা স্বস্তি এসেছে। নতুন সভাপতি ফারুক আহমেদের প্রতি ছিল বড় ধরনের প্রত্যাশা। তিনি যেভাবে পাপনের এক যুগে গড়ে ওঠা কাঠামো ভেঙে দেশের ক্রিকেটে নতুন কিছু আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, সেই ব্যাপারে আশাবাদী ছিল সবাই। ফারুকও বলেন, “সময় দিন, কাজ করে দেখাবো,” এবং তার কথার সঙ্গে মিল রেখে কার্যত কাজ শুরু করেন।
একটি দীর্ঘদিনের দাবি ছিল, জাতীয় দলের কোচিং স্টাফে দেশি কোচদের নিয়োগ দেয়া। ফারুক আহমেদ এই বিষয়টি ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করে আশ্বাস দিয়েছিলেন, এবং অবশেষে তা বাস্তবায়ন হয়েছে। মোহাম্মদ সালাউদ্দিনকে বাংলাদেশ জাতীয় দলের সিনিয়র সহকারী কোচ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে বিসিবি। সালাউদ্দিন নিজেই জানিয়েছেন, ফারুক আহমেদ ছিলেন তার নিয়োগের পেছনের মূল প্রেরণা।
বিসিবি প্রকাশিত একটি ভিডিওবার্তায় সালাউদ্দিন বলেন, “দেশি কোচদের জন্য প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা অনেকদিনের দাবী ছিল। আমি যদি তাদের পথপ্রদর্শক হতে পারি, সেটা আমার জন্য গর্বের বিষয়। এই দায়িত্ব নেওয়ার মূল কারণ হলো, দেশি কোচদের প্রতি বোর্ডের বিশ্বাস এবং জনগণের মধ্যে দেশি কোচদের প্রতি আস্থা বাড়ানো। আমি চাই, পরবর্তী কোচরা যেন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভালো পারফর্ম করতে পারে।”
এছাড়া, তিনি আরো বলেন, “যেহেতু আমি এত বছর কোচিংয়ে অভিজ্ঞ, তাই আমার দায়িত্ব হলো তরুণ কোচদের জন্য পথ তৈরি করা। এটা আমার জন্য একটা চ্যালেঞ্জ, যদি আমি সফল হই, তবে পরবর্তী প্রজন্মের কোচদের জন্য অনেক সুযোগ সৃষ্টি হবে।”
ফারুক আহমেদকে তিনি সবচেয়ে বেশি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, “এটা সত্যি যে, ফারুক ভাইয়ের প্রচেষ্টায় আমি এই দায়িত্ব গ্রহণ করতে রাজি হয়েছি। তিনি আমাকে অনেকবার ডেকে বুঝিয়েছেন, যে দেশের কোচিংয়ে দেশি কোচের প্রয়োজন। আর আমি মনে করি, এখনই সেরা সময়, যেহেতু আমি আমার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা দেশের জন্য কাজে লাগাতে পারব।”
এর আগে, সালাউদ্দিন জাতীয় দলের সহকারী কোচ এবং ফিল্ডিং কোচ হিসেবে কাজ করেছেন, যখন সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, তামিম ইকবালরা তরুণ ছিলেন। এখন, যখন পঞ্চপান্ডব যুগ শেষ হতে চলেছে, সালাউদ্দিন নতুন প্রজন্মের ক্রিকেটারদের গড়ে তোলার জন্য কাজ করতে চান। তার মতে, “আগে আমি যেসব তরুণ ক্রিকেটারদের সঙ্গে কাজ করেছি, তাদের সাফল্যের পর, নতুন প্রজন্মের খেলোয়াড়দের সাহায্য করতে চাই। আমার অভিজ্ঞতা থেকে তাদের টেকনিক্যাল, ট্যাকটিক্যাল ও মানসিক দিক থেকে সাহায্য করতে চাই। এতে তাদের উন্নতি হবে এবং দেশের ক্রিকেট উপকৃত হবে।”
এখন, সালাউদ্দিন সিনিয়র সহকারী কোচ হিসেবে দায়িত্ব শুরু করেছেন এবং আফগানিস্তান সিরিজের জন্য যে ক্রিকেটাররা সুযোগ পাননি, তাদের নিয়ে মিরপুরে কাজ করছেন। আসন্ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের মাধ্যমে তিনি পুরোদমে তার দায়িত্ব পালন শুরু করবেন।