২০১৩ সালে সান্তোস থেকে স্প্যানিশ ক্লাব বার্সেলোনায় যোগ দেন ব্রাজিলিয়ান তারকা নেইমার জুনিয়র। ২০১৭ সালে কাতালান ক্লাবটি ছেড়ে ফরাসি ক্লাব পিএসজিতে যোগ দেন তিনি। তবে নেইমার যাতে বার্সা না ছাড়েন, সেজন্য বার্সেলোনার তখনকার প্রাণভোমড়া লিওনেল মেসিও অনুরোধ করেন।
সম্প্রতি বিশ্বকাপ জয়ী ব্রাজিলিয়ান গ্রেট রোমারিওর সঙ্গে এক পডকাস্টে সে কথাই বলেন নেইমার। ব্রাজিলিয়ান এই তারকার ভাষ্যমতে, ‘লিও মেসি আমার কাছে এসে বললেন, ‘‘তুমি চলে যাচ্ছো কেন? তুমি কি বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় হতে চাও? আমি তোমাকে বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় বানাতে পারি।’’
মেসির এমন কথার পর নেইমার তাকে বলেছিলেন, ‘আমি তাকে বলেছিলাম ‘‘না, এটা তেমন কিছু নয়। এটা (ক্লাব ছাড়া) ব্যক্তিগত কারণে।’’ অবশ্যই অর্থনৈতিকভাবে আমি বার্সেলোয় যা পেতাম তার চেয়ে ভালো ছিল…এবং সেখানে ব্রাজিলিয়ানরাও (ফুটবলার) ছিল। আমি ব্রাজিলিয়ানদের সঙ্গে খেলতে চেয়েছিলাম। সেখানে থিয়াসো সিলভা, দানি আলভেজ, মার্কিনিওস, লুকাস মৌরা ছিল। তারা সবাই আমার বন্ধু ছিল।’
নেইমারের পর ২০২১ সালে পিএসজিতে যোগ দেন মেসিও। পিএসজির আক্রমণভাগে তখন বিশ্বকাপজয়ী কিলিয়ান এমবাপ্পেও ছিলেন। যদিও এমবাপ্পের সঙ্গে নেইমার ও মেসির তিক্ত সম্পর্কের কথা গণমাধ্যমে অনেকবার উঠে এসেছে। মেসি পিএসজিতে ভেড়ার পর এমবাপ্পে কিছুটা ঈর্ষান্বিত হয়েছেন বলে মনে করেন নেইমার।
ব্রাজিলিয়ান তারকার ভাষ্য, ‘তার সঙ্গে আমার কিছু ব্যাপার ছিল, আমাদের মধ্যে একটু ঝগড়া হতো। তাকে যখন প্রথমে পাই তখন বয়স অনেক কম ছিল। শুরুতে সম্পর্ক বন্ধুত্বপূর্ণই ছিল। আমি তাকে ‘‘গোল্ডেন বয়’’ বলে ডাকতাম। তার সঙ্গে আমার কথা হতো, তার সঙ্গে খেলা হতো। তাকে বলতাম যে, সে সেরাদের একজন হবে। আমি সবসময় সাহায্য করতাম, সবসময় তার সঙ্গে কথা বলতাম। তবে যখন লিও এলো, সে সে একটু ঈর্ষান্বিত হয়ে উঠল। সে আমার ভাগ কাউকে দিতে চায়নি (হাসি দিয়ে)। এভাবেই দুজনের (নেইমার-এমবাপ্পে) মধ্যে ঝগড়ার শুরু, আচরণে পরিবর্তন।’
মেসি কীভাবে বার্সেলোনায় নেইমারকে সাহায্য করতেন সেটি একটি উদাহরণ দিয়ে বলেছেন নেইমার, ‘একদিন আমি খুব হতাশ ছিলাম। প্রথমার্ধ চলছিল। আজও মনে আছে, অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের বিপক্ষে… আমি নিজের উপর রেগে ড্রেসিংরুমে ঢুকেছিলাম। আমি খুব খারাপ খেলছিলাম। ‘‘আমি কী করছি?’’ ভেবে কাঁদতে কাঁদতে ওয়াশরুমে ঢুকে গেলাম। তারপর দরজায় ধাক্কা, লিও মেসি এল।’
নেইমারকে মেসি বলেছিলেন, ‘তুমি কাঁদছ কেন?’ জবাবে নেইমার বলেন, ‘না, আমি ঠিক আছি, আমি ঠিক আছি।’ ঘটনার বর্ণনায় নেইমার আরও বলেন, ‘এরপর দানি আলভেস এলেন এবং মেসি বললেন, ‘‘শান্ত হও, আমরা তোমাকে সাহায্য করতে এসেছি। আমরা চাই তুমি সান্তোসে যেমন করেছো তেমনই কোনো চাপ ছাড়াই তোমার সেরা ফুটবল খেলো। যদি তোমার কিছুর প্রয়োজন হয়, তুমি আমাকে বলতে পারো।’’ তারপর আমি আমি আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠি। খেলতে আরও আগ্রহী হয়ে উঠি এবং সবকিছু ঠিকঠাক হতে শুরু করে।’