সর্বশেষ
বিয়ের ১২ দিন পর জানা গেলো স্ত্রী আসলে পুরুষ
বিয়ের ১২ দিন পর জানা গেলো স্ত্রী আসলে পুরুষ

বিয়ের ১২ দিন পর জানা গেলো স্ত্রী আসলে পুরুষ

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একে-অপরের পরিচয়। ধীরে ধীরে পরিচয় পরিণত হয় ভালোবাসায়। এরপর এক বছরের প্রেমের সম্পর্কের পর অবশেষে হলো বিয়ে। তবে সংসার শুরু কিছুদিন পরেই স্বামী জানতে পারলেন যে তার স্ত্রী আসলে নারী নন, পুরুষ! অবিশ্বাস্য হলেও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দ্বীপ রাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়ায় এমন ঘটনা ঘটেছে।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের তথ্যানুযায়ী, ভালোবেসে বিয়ে করলেও এর ১২ দিনের মাথায় ২৬ বছর বয়সী ওই স্বামী জানতে পারেন, তার স্ত্রী আদিন্দা কানজা আসলে নারীর ছদ্মবেশে থাকা একজন পুরুষ।

একে (ছদ্মনাম) নামক ওই ভুক্তভোগী যুবক ইন্দোনেশিয়ার জাভা দ্বীপের নারিঙ্গুল এলাকার বাসিন্দা। ২০২৩ সালে তিনি আদিন্দা কানজা (২৬) নামক এক তরুণীর সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিচিত হন। পরে দুজনেই দ্রুত সামনা-সামনি দেখা করার পরিকল্পনা করেন। একে বলেন, কানজা সর্বদা ঐতিহ্যবাহী মুসলিম পোশাক পরতেন যার ফলে তাদের দেখা করার সময় তার পুরো মুখ ঢেকে থাকত এবং সে নিজেকে একজন ধর্মপ্রাণ মুসলমান বলে দাবি করত।

একে আরো বলেন, কানজার নেকাব পরার বিষয়টি তার খারাপ লাগেনি এবং এটিকে ইসলামের প্রতি ‘ওই তরুণীর’ ভক্তির চিহ্ন হিসেবেই দেখেছিলেন তিনি।

পরিচয় হওয়ার পরে প্রায় এক বছর ধরে প্রেমের সম্পর্কে ছিলেন তারা। শেষমেশ চলতি বছরের এপ্রিলে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন তারা। বিয়ে করার আগে কানজা জানিয়েছিলেন যে তার মা-বাবা মারা গেছেন এবং বিয়েতে উপস্থিত থাকার মতো কোনো আপনজন তার নেই। এমন পরিস্থিতিতে চলতি বছরের ১২ এপ্রিল একের বাড়িতে অনাড়ম্বর ও ইসলামী রীতিতে বিয়ের আয়োজন করা হয়। কিন্তু বিয়ের পরেও দেখা দেয় বিপত্তি।

বিয়ের পরেও কানজা ক্রমাগত তার স্বামীর কাছ থেকে নিজের মুখ লুকিয়ে রাখতে থাকে এবং গ্রামে স্বামীর পরিবার এবং বন্ধুদের সাথেও মেলামেশা করতে অস্বীকার করে। এমনকি ঋতুচক্রের মতো মাসিক অসুস্থতার কারণ উল্লেখসহ নানা অজুহাতে স্বামীর ঘনিষ্ঠতা এড়ানোর চেষ্টাও চালাতে থাকেন তিনি।

দিনের পর দিন নববিবাহিতা স্ত্রীর এমন সন্দেহজনক আচরণের পর, একে তার স্ত্রীর বিষয়ে খোঁজ-খবর নেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। বিভিন্ন সোর্সের মাধ্যমে তিনি তার স্ত্রীর পরিবারের ঠিকানা খুঁজে বের করেন আর সব জানতে পেরে চোখ কপালে উঠে যায় তার। তিনি জানতে পারেন, কানজার মা-বাবা উভয়েই জীবিত ও সুস্থ রয়েছেন। সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বিষয় হলো, কানজা আসলে নারী নন। পুরুষ হয়েও নারীর বেশে অভিনয় করেছেন তিনি।

আরো জানা যায়, কানজার প্রকৃত নাম ইএসএইচ। ‘প্রতারক’ এই যুবকের মা-বাবার দাবি, তারা তাদের সন্তানের বিয়ে সম্পর্কে কিছু জানেনই না।

শেষমেশ পুলিশ ইএসএইচকে গ্রেফতার করে।পুলিশ জানিয়েছে, আপনি যদি তাদের বিয়ের ছবি দেখেন, তাহলে দেখবেন- কানজাকে দেখতে একেবারে সত্যিকারের নারীর মতো দেখাচ্ছে। তার বেশ কোমল ও মৃদু কণ্ঠস্বরও রয়েছে, তাই তাকে নারী নয় বলে সন্দেহ করার কোনো কারণ ছিল না।

জিজ্ঞাসাবাদে ইএসএইচ জানান, একের অর্থ হাতিয়ে নিতেই ভয়ঙ্কর এই প্রতারণা করেছেন তিনি।

জানা গেছে, অভিযোগ প্রমাণিত হলে স্থানীয় আইন অনুযায়ী প্রতারণার দায়ে চার বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে ইএসএইচের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *