অত্যন্ত সুপরিচিত কই মাছ শক্ত প্রাণের জন্য বিখ্যাত। কই মাছের আকার দেখতে চ্যাপ্টা ও লম্বাটে দেহের এ মাছটির দেহের রং উপরের দিকে ঈষৎ সবুজ-বাদামী এবং নিচের দিকে হালকা রংয়ের। তবে পরিবেশের কারণে কোন কোন মাছ অত্যন্ত গাঢ় বর্ণের হয়ে থাকে। কই আকারে ২২ সে.মি. পর্যন্ত হতে পারে।কই মাছ খাল-বিল, হাওড়-বাওড়, নদী, পুকুরসহ সকল ধরনের স্বাদুপানির জলাশয়ে বসবাস করে। কখনও কখনও জলাশয়ের অতিরিক্ত আগাছাপূর্ণ স্থানে এদের পাওয়া যায়। কই মাছের খাদ্য তালিকায় ক্ষুদ্র প্রাণিকণা, জলজ পেকা-মাকড় এবং তাদের ডিম ও লার্ভা, মশা ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত।
কই মাছ বর্ষাকালে প্রজনন করে থাকে। এরা সাধারণত বর্ষায় প্লাবিত জলাশয়ে প্রজনন করে থাকে। বর্ষাকালে স্থলভাগের যে স্থানে সামান্য জলস্রোতের সৃষ্টি হয় সেস্থান দিয়ে কানকোর সাহায্যে এক জলাশয় থেকে অন্য জলাশয়ে এদের গমনাগমন করতে দখা যায়। কই মাছ বাজারে সাধারণত জীবন্ত অবস্থায় পাওয়া যায় এবং এর উচ্চ বাজার মূল্য ও চাহিদা রয়েছে।
কই মাছের ভাজি বা দোঁপেয়াজা সকলেরই পছন্দ। এছাড়া লাউ-এর পাতা দিয়ে কই মাছের ভাপাও বিখ্যাত। কই মাছে শতকরা ৭০% পানি, ৮.৮% চর্বি, ১৪.৮% আমিষ সহ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে অন্যান্য উপাদান যেমন ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, লৌহ ইত্যাদি থাকে।প্রায় ১৫ বছর আগেও আমাদের আশেপাশের সকল পুকুর, ডোবা- নালায় প্রচুর পরিমাণে কই মাছ পাওয়া গেলেও বর্তমানে আর তেমন পাওয়া যায় না বললেই চলে।
প্রজনন ক্ষেত্র কমে যাওয়া, ডিমওয়ালা মাছ ধরা ইত্যাদি কারণে কই মাছের সংখ্যা বর্তমানে অনেক কমে গেছে এবং সংরক্ষণের জরুরী ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে অচিরেই এই মাছটির অস্তিত্ব হুমকির মুখে পতিত হবে।তাই কৈ মাছ শিকার করার সময় অনেক সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়।
তবে কই মাছের একটি দুর্বল জায়গা আছে। বর্ষাকালে যখন আকাশে বিদ্যুৎ চমকায় এবং বৃষ্টি পড়ে তখন কই মাছ পানির মধ্যে থাকতে পারে না পানি থেকে ডাঙ্গায় উঠে আসে। ঠিক সেই সময় কই মাছ শিকার করতে অনেক সহজ এবং অনেক বেশি পাওয়া যায়। ভিডিওটিতে দেখা যায় একটি মেঘলা দিনে একটি জলাশয়ের পানি বৃষ্টির জন্য একদম ভরে যায়।
সেখানে কিছু দেশীয় মাছ কই, এগুলো ছিল। আমরা সকলেই প্রায় জানি বৃষ্টির দিন গুলোতে মানে যখন প্রচুর বৃষ্টি হয় তখন মাছ গুলো উপরে উঠে আসে। আসলে নতুন পানি আসলে এরকম হয়ে থাকে। মাছ গুলো নতুন পানিতে সাঁতার কাটে। ঠিক এ সময় যদি মেঘ ডাকে। তখন মাছ গুলো ভয় পেয়ে ছোটাছুটি করে। সকলের অবগত আছে মাছ পানি ছাড়া বাঁচে না।