সর্বশেষ

ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহের মেলায় এক মণের গ্রাস কার্প

গত বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) এ মেলা শুরু হয়। এ দিন দুপুর ১২টার মধ্যেই এসব আড়তে পাইকারি দর হিসেবে বিভিন্ন প্রজাতির মাঝারি ও বড় আকারের কয়েক কোটি টাকার মাছ বেচাকেনা হয়েছে। প্রায় চারশ’ বছরের গ্রামীণ ঐতিহ্যকে ধরে রেখেছে বগুড়ার পোড়াদহ মেলা। মাছের জন্য বিখ্যাত বগুড়ার গাবতলী উপজেলার পোড়াদহ মেলায় গড়ে উঠেছে অস্থায়ী পাইকারি মাছের আড়ত।




প্রতি বছরের মতো এবারও মেলা শুরুর একদিন আগে বসানো এসব আড়তে এরই মধ্যে বিক্রি হয়েছে কোটি টাকার মাছ। জানা যায়, মেলা প্রাঙ্গণের পূর্বপ্রান্তে রাস্তা ঘেঁষে ১৪টির মতো বড় আড়ত বসেছে। ভোর ৪টা থেকে মেলায় আসা বিভিন্ন এলাকার খুচরা ব্যবসায়ীরা এসব আড়ত থেকে মাছ কিনছেন। এরপর তারা মেলায় বসানো দোকানে সেসব মাছ তোলেন। পরে বিক্রি করেন ক্রেতাদের কাছে।

গেল বছরগুলোর তুলনায় এ বছর মেলায় সর্বোচ্চ মাছ আমদানি করেছেন বলে দাবি করেন ব্যবসায়ীরা। এর মধ্যে ব্লাক কার্প, গাঙচিল, চিতল, বোয়াল, রুই, কাতলা, মৃগেল, কার্প, বিগহেড, কালিবাউশ, পাঙ্গাস, হাংড়ি, গ্রাস কার্প, সিলভার মাছ অন্যতম। ঐতিহ্যবাহী এ মেলা শুরুর প্রায় দুই সপ্তাহ আগে থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পাইকারি ব্যবসায়ীরা মাছ কিনতে শুরু করেন। এসব মাছ তারা সংরক্ষণ করেন ছোট ছোট পুকুরে।




পরে স্থানীয় আড়তদারের মাধ্যমে তা মেলায় আসা খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করেন। মেলা শুরুর একদিন আগে পাইকারি ব্যবসায়ীরা ছোট-বড় ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহনে করে মাছগুলো মেলায় নিয়ে আসেন। মৎস্য আড়তের মালিক জানান, প্রতি বছরের মতো এবারও পোড়াদহ মেলায় আড়ত বসিয়েছন তিনি। এ মেলায় আড়তদাররা ভোর ৪টা থেকে পাইকারি মাছ বিক্রি শুরু করেন।

সকাল সাড়ে ১১টার মধ্যে তিনি মাঝারি ও বড় আকারের বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ২ কোটি টাকার মাছ বিক্রি করেছেন। এর মধ্যে ৫-১৫ কেজি ওজনের মাছ সব চেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছে। বিক্রি করা মাছের মধ্যে রুই, মৃগেল, সিলভার, বিগহেড, কাতলা অন্যতম।




এবার এ মেলায় এক মণ ওজনের একটি গ্রাস কার্প মাছ এনেছেন এক ব্যবসায়ী। আড়তদাররা বলেন, এ মেলায় ৬শ’ থেকে ৮শ’র মতো খুচরা মাছ ব্যবসায়ী দোকান বসিয়েছেন। তারা নিজেরাও বিভিন্ন এলাকা থেকে মাছ নিয়ে এসেছেন। রাজশাহী, নাটোর, সিরাজগঞ্জ, নওগাঁ, চট্টগ্রাম, সাতক্ষীরাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা শহর থেকে ব্যবসায়ীরা এ মেলায় পাইকারি মাছ বিক্রি করতে আসেন।

পাশাপাশি প্রত্যেক খুচরা বিক্রেতা ক্রেতাদের চাহিদা মাথায় রেখে আড়ত থেকেও মাছ কিনেছেন। খুচরা ব্যবসায়ীদের মাছ বিক্রির হিসাব জানতে মেলা শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে বলেও জানান আড়তদাররা। প্রতিবছর ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ মেলায় প্রধান আকর্ষণ ৪০কেজি ওজনের ব্লাক কার্পমাছ। প্রতিবছর মাঘের শেষ অথবা ফাল্গুনের প্রথম বুধবার পোড়াদহ এলাকায় ইছামতী নদীর তীরে এ মেলার আয়োজন করা হয়।




বগুড়া শহর থেকে ১১ কিলোমিটার দূরের মেলাটি একদিনের হলেও আশপাশের গ্রামগুলোতে জামাই উৎসব চলে তিনদিন। মেলায় সবচেয়ে বড় আকর্ষণ থাকে বিভিন্ন প্রজাতির বড় মাছ। এ কারণে অনেকের কাছে পোড়াদহের মেলাটি মাছের মেলা হিসেবে পরিচিত। সেখানে পোড়াদহ মেলার পরেরদিন ‘বউ’ মেলা বসে। এ সময় সাধারণত নারীরা হরেক রকমের পণ্য কিনে থাকেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *